তাবলিগের সাদপন্থিদের খুনি-সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে খুলনা তাবলীগী মার্কাজ মসজিদে নিষিদ্ধ ঘোষণা দিয়েছে ওলামা-মাশায়েখ ও তৌহিদি জনতা। একইসঙ্গে খুলনা মার্কাজ মসজিদে সাদপন্থিদের যাবতীয় কার্যক্রম স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করে লিখিত নির্দেশ জারি করার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানানো হয়। এমনকি সাদপন্থিরা যাতে খুলনা মার্কাজের আশপাশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণেরও অনুরোধ জানানো হয়।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) নগরীর নিরালা তাবলীগী মার্কাজ মসজিদ চত্বরে জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব দাবি করে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, মারকাজুল উলুম মাদরাসার নায়েবে মুহতামিম মুফতি আব্দুল্লাহ ইয়াহইয়া।
সংবাদ সম্মেলন থেকে ওলামায়ে কেরাম বলেন, আগে মনে করা হতো সাদপন্থিরা শুধু সাদের অনুসারী। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে তারা দিল্লির মোদির অনুসারী। দেশের অস্থিতিশীল অবস্থার জন্য পতিত আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ড, ২০১৩ সালের ঢাকার শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ড, এবারের টঙ্গীর হত্যাকাণ্ড এবং সর্বশেষ সচিবালয়ের অঙ্গিকাণ্ড—সব একই সূত্রে গাঁথা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, গত ১৭ ডিসেম্বর গভীর রাতে সরকারি সিদ্ধান্ত এবং সমন্বয়কদের পরামর্শ উপেক্ষা করে টঙ্গীর ময়দানে নামাজরত ও ঘুমন্ত মুসল্লিদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে চারজনকে শহীদ করাসহ অসংখ্যক সাথীকে মারাত্মকভাবে আহত করা হয়। এমন বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে দেশের শীর্ষস্থানীয় ওলামায়ে কেরাম এবং তাবলিগের আলমি শুরার পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে সাদপন্থিদের সমস্ত কার্যক্রম বাংলাদেশে নিষিদ্ধের দাবি জানানো হয়। যার প্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাংলাদেশের তাবলিগের মার্কাজ কাকরাইল মসজিদে সাদপন্থিদের সমস্ত কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় খুলনার শীর্ষস্থানীয় ওলামায়ে কেরাম ও আলমি শুরা কর্তৃক পরিচালিত তাবলিগের মূলধারার সাথীরা স্থানীয় প্রশাসনের নিকট খুলনা তাবলীগ মার্কাজে সাদপন্থিদের সমস্ত কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন। সর্বশেষ শনিবারের সংবাদ সম্মেলন থেকে সাদপন্থিদের স্থায়ীভাবে তাবলীগ মসজিদে নিষিদ্ধ ঘোষণা হয়।
সংবাদ সম্মেলনের আগে সূচনা বক্তব্য দেন ওলামা-মাশায়েখদের নেতা মুফতি জিহাদুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দারুল উলুম মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মুশতাক আহমাদ, খাদেমুল ইসলাম মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আব্দুল্লাহ, সাজিয়াড়া মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মুশতাক আহমাদ, পুরাতন সাথী তারেক, মুবাল্লিগ মুফতি মাহমুদ, মারকাজ মসজিদের মুতাওয়াল্লি পক্ষে হারুন, মাওলানা তাফসীর, মাওলানা মুফতি হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/ টিএ